বাউফল উপজেলার ভূভাগ সমতল থেকে কিছুটা অসমতল পলল ভূমির ডাংগা ও বিল নিয়ে গঠিত। এ উপজেলাকে প্রধানতঃ দু’টি ভূ-প্রাকৃতিক অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে। যথাঃ (ক) কটাল পলল ভূমি এবং (খ) মেঘনা পলল ভূমি।
মোট আয়তন ৩৫,৫৮৫ হেক্টর, উপজেলার প্রায় ৭৪ শতাংশ। উপজেলার পূর্বাংশ বাদে অবশিষ্ট সম্পূর্ণ এলাকা এ ভূ-প্রাকৃতিক অঞ্চলের অন্তর্ভূক্ত। এলাকাটি সমতল ডাংগা এবং প্রশস্ত বিল ভূমি দ্বারা গঠিত এবং ছোট বড় খাল দ্বারা বিভক্ত। উঁচু ডাংগা জমি বর্ষা বা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়না। নীচু ডাংগা এবং বিলভূমি বর্ষা ও জোয়ারের পানিতে স্বল্প গভীর ভাবে প্লাবিত হয়, তবে কিছু অংশ মাঝারি গভীর ভাবে প্লাবিত হয়। এ কটাল পলল ভূমির পলি গাংগেয় উৎস হতে আগত এবং নতুন অবস্থায় চুনযুক্ত।
মোট আয়তন ১২,৬০০ হেক্টর, উপজেলার প্রায় ২৬ শতাংশ। এলাকাটি উপজেলার পূর্বাংশে বিস্তৃত এবং সমতল প্রশস্ত ডাংগা ভূমি নিয়ে গঠিত। এ এলাকা প্রধানতঃ বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে স্বল্প গভীরভাবে প্লাবিত হয়, তবে কিছু অংশ মাঝারী গভীরভাবে প্লাবিত হয়।
ভূমি শ্রেণি/পুকুর নদী | আয়তন (হেক্টর) |
উচু জমি | ৩৫০ |
মাঝারী উচু জমি | ৩৫,৩২০ |
মাঝারী নীচু জমি | ৪,০৮০ |
পুকুর | ১,৪৩৮.৭ |
নদী | ১৮.৯৫ |
জলবায়ু বলতে কোন নির্দিষ্ট অঞ্চলের নির্দিষ্ট সময়ের বৃষ্টিপাত, তাপমাত্রা, তুষারপাত, শিশিরপাত, শিলাবৃষ্টি, কুয়াশা ও আর্দ্রতা সম্বলিত গড় আবহাওয়াকে বুঝায়। বৃষ্টিপাত ও তাপমাত্রার পরিমাণ প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো উদ্ভিদ ও আবাদি ফসলের ধরণ নির্ধারণ করে। তাই ঋতুভেদে বিভিন্ন ফসল বিভিন্ন অঞ্চলে জন্মায়। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টিপাত হয়।
জলবায়ুর উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখাযায় যে, বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের মত এ উপজেলায়ও ক্রান্তিয় মৌসুমী জলবায়ুর অন্তর্গত। এখানে ষড়ঋতুর মধ্যে প্রধানত তিনটি মৌসুম জোরালো ভাবে পরিলক্ষিত হয়। বর্ষা মৌসুম সাধারণত মে হতে অক্টোবর মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয়। শতকরা প্রায় ৯১ভাগ বর্ষণ এ সময় হয়। বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের প্রকোপ প্রধানত মে-নভেম্বর মাসে বেশী হয়। কোন কোন বছর এ অঞ্চল ঘূর্ণিঝড় ও সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে আক্রান্ত হয়ে থাকে। শীতকাল আরম্ভ হয় নভেম্বরে এবং শেষ হয় ফেব্রুয়ারি মাসে। এ মৌসুম অত্যন্ত শুষ্ক ও শীতল, কখনও কখনও সামান্য বৃষ্টিপাত হয়। মার্চ ও এপ্রিল মাসকে গ্রীষ্ম বা প্রাক বর্ষাকাল বলে গণ্য করা হয়। এ সময় বাতাস খুবই উত্তপ্ত হয় এবং বাতাসে জলীয় বাস্প খুবই কম থাকে। মাঝে মাঝে বর্ষণসহ ঝড় বা দমকা বাতাস বইতে থাকে। একে ‘কালবৈশাখী’ বলা হয়। এ সময় শিলাবৃষ্টিও হয়ে থাকে।
বৃষ্টিপাতের বি‡শ্লষণে দেখাযায় যে, শীতকালে গড় বৃষ্টিপাত ১১ মিলি মিটার, যা ঐ সময়ের বাস্পীভবনের পরিমাণের চেয়ে কম। দীর্ঘ মেয়াদী পরিসংখ্যানে আরো দেখাযায় যে, বছরে শীত মৌসুমে ৪/৫ মাস প্রায় শুষ্ক থাকে, আবার বর্ষা মৌসুমে কোন মাসে মাত্রাধিক বৃষ্টিপাত হয়। নভেম্বর হতে মার্চ মাস পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের মাসিক হার ৭৫মিঃমিঃ এর কম বিধায় এ মাস গুলোকে শুস্ক মাস বলা চলে। গড় বৃষ্টিপাত ও তাপমাত্রা যথাক্রমে নীচে দেখানো হলো- বাউফল উপজেলার আবহাওয়া পটুয়াখালী কেন্দ্রের আবহাওয়ার প্রায় অনুরূপ হবে বলে ধরা যায়।
পটুয়াখালী আবহাওয়া কেন্দ্রের দীর্ঘমেয়াদী গড় তাপমাত্রা (ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড) ও বৃষ্টিপাত (মিলিমিটার)।
| জানু | ফেব্রু | মার্চ | এপ্রিল | মে | জুন | জুলাই | আগ | সেপ্টে | অক্টো | নভে | ডিসে | বাৎসরিক |
তাপমাত্রা | ১৯.০ | ২১.৮ | ২৬.২ | ২৭.৯ | ২৮.৮ | ২৮.২ | ২৭.৪ | ২৭.৫ | ২৭.৪ | ২৭.৭ | ২৪.৯ | ২০.৬ | ২৫.৬ |
বৃষ্টিপাত | ১৩ | ১৬ | ৪৮ | ১০৯ | ২৭৪ | ৫৭৯ | ৬০০ | ৫২৪ | ৪০১ | ১৭৭ | ৬২ | ২০ | ২৮২৩ |
মৌসুম | মৌসুমের গড় বৃষ্টিপাত | ||||||||||||
রবি মৌসুম (নভেম্বর- ফেব্রুয়ারি) প্রাক-খরিপ মৌসুম (র্মাচ-মে) খরিপ মৌসুম (জুন-অক্টোবর) | ১১১ ৪৩১ ২,২৮১ |
মোট জমির পরিমাণ ও শ্রেণিঃ
জমির বিবরণ | আয়তন |
মোট জমি | ৪৮,১৮৫ হেক্টর |
স্থায়ী পতিত জমি | ১৫০ হেক্টর |
নীট ফসলী জমি | ৩৬,২৫০ হেক্টর |
এক ফসলী জমি | ৭,২০০ হেক্টর |
দো-ফসলী জমি | ২০,৫০০ হেক্টর |
তিন ফসলী জমি | ৮,৫৫০ হেক্টর |
মোট ফসলী জমি | ৭৩,৮৫০ হেক্টর |
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস